‘৭০টি উপজেলা প্লাবিত, প্রকোপ কমবে মঙ্গলবার থেকে’

প্রকাশিত: ৫:২৯ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২২

 

আগামী মঙ্গলবার (২১ জুন) থেকে বন্যাকবলিত এলাকার পানি কমতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। রবিবার (১৯ জুন) সচিবালয়ে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আবহাওয়া অধিদফতর ও বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ বিভাগের তথ্য বলছে, সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে। মঙ্গলবার থেকে পানি কমতে শুরু করবে। এই সময়ে উজানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ভাটির দিকে অবনতি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে সুনামগঞ্জে অপরিবর্তিত থাকলেও হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে বন্যার অবনতি হয়েছে। দেশের ১২ জেলার ৭০টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত। নতুন করে ছয়টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া দুজনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে সিলেট জেলার ৩০ লাখ ও সুনামগঞ্জ জেলার ২০ লাখ লোক কঠিন সময় পার করছেন। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় সিলেট রেলস্টেশন থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর বিদ্যুৎ না থাকায় বন্যার পানিতে ডুবে থাকা সুনামগঞ্জ এখনো অন্ধকারে রয়েছে। এদিকে পানি প্রবেশ করায় শনিবার বেলা ১১টার দিকে কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সিলেটে বিদ্যুত্সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যদিও পানি নিষ্কাশন করে উপকেন্দ্রটি চালু করা হলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিলেটের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। বানভাসি এলাকাগুলোতে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, গো-খাদ্য ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবির উদ্ধার তত্পরতা চলছে।

গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমাবনতি চলছিল। আর শনিবার থেকে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় বন্যা বিস্তৃতি লাভ করছে। সিলেটের অনেক স্থানে সড়ক যোগাযোগ সরাসরি বন্ধ রয়েছে। এছাড়া পানি উঠায় সিলেট রেলস্টেশন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখন মাইজগাঁও থেকে ট্রেন চলাচল করছে। এর আগে রানওয়েতে পানি প্রবেশ করায় শুক্রবার থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ধরনের বিমান উঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ইতোমধ্যে সিলেট নগর ও জেলার সবকয়টি উপজেলায় পানি ঢুকে পড়েছে। সিলেটে শহরের উঁচু স্থানও প্লাবিত হচ্ছে। সিলেট ওসমানী হাসপাতালের নিচ তলায় হু-হু করে পানি ঢুকতে দেখা যায় গতকাল দুপুরে। জরুরি বিভাগ, বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানি প্রবেশ করে। অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। শহরের বিভিন্ন ছড়া ও খাল দিয়ে পানি ঢুকছে। সুরমা তীরবর্তী আবাসিক এলাকা উপশহর, সোবহানীঘাট, তেররতন, শেখঘাট, নবাব রোড, কুশিঘাট, তালতলা, কাজীরবাজার, শিবগঞ্জ, খরাদিপাড়া, তপোবন আবসিক এলাকা, আখালিয়া মাড়িয়ে পানি এখন মূল শহরের জিন্দাবাজারে পৌঁছেছে।

সিলেট/আবির