ছাত্রদল-শিক্ষার্থী সংষর্ষে উত্তপ্ত সিকৃবি, তদন্ত কমিটি গঠন The Daily Sylhet The Daily Sylhet প্রকাশিত: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০২৪ ব্যানার ছিঁড়াকে কেন্দ্র করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ছাত্রদলের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে রাত ২ টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রদল নেতাসহ ছয়জন আহত হন। শুক্রবার ভোর ৩টার দিকে সেনাবাহিনী ক্যাম্পাসে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিবে, এ ঘটনার পর শুক্রবার ভোরেই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কমিটি বাতিল, এক নেতাকে বহিস্কার ও ঘটনার তদন্ত একটি কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রিয় ছাত্রদল। জানা যায়, শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষিগুচ্ছ ভর্তি–ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ব্যানার সাঁটায়। তবে রাতে কে বা কারা সেসব ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে পাশের নর্দমায় ফেলে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় হলে থাকা শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদল নেতাদের কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় সেখানে থাকা বহিরাগত এক ছাত্রদল নেতাকে মারধর করেন হলে থাকা শিক্ষার্থীরা। পরে বহিরাগত ওই ছাত্রদল নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বালুচর ও নয়াবাজার এলাকার মানুষ নিয়ে এসে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। এরপরই পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি বাঁশ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হলে পরে সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা মো. আবু সাঈদ রবিসহ ছয়জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ভামেলার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু মারামারি হাতের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় তাৎক্ষণাৎ কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি। পরে আমরা পুলিশ ও সেনা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করি। এদিকে এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে ক্যাম্পাসের দ্বিতীয় গেইটের সামনে সড়কে অবস্থান নেয়। এ ব্যাপারে সিবৃবি ছাত্রদল নেতা আবু সাঈদ জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাইরে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদল ব্যানার টানিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দোসর কিছু শিক্ষার্থী ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দেয়। এটা জিজ্ঞেস করতে গেলে ওই শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর চড়াও হন। যারা ব্যানার ছিঁড়েছে, পদ-পদবি না থাকলেও তারা ছাত্রলীগের সমর্থক বলে তিনি দাবি করেছেন। এদিকে, এ সংঘর্ষের ঘটনায় সিকৃবি ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বহিস্কার করা হয়েছে সিকৃবি ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি সাহেদুল ইসলাম রোমেনকে। একই সাথে ঘটনা তদন্তে কেন্দ্র থেকে গঠন করা হয়েছে কমিটি। কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রচার সম্পাদক (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদা) শরীফ প্রধান শুভকে দিয়ে দুই সদস্যেরএই তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ২৭ অক্টোবরের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করবেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের বরাত দিয়ে কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক (সহসভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। কমিটি বিলুপ্তের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। শীঘ্রই এই ইউনিটির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।’ স্থানীয় ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি হয়েছিল। তবে কমিটিতে থাকা শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আর নতুন কমিটি গঠিত হয়নি। সিলেট/আবির SHARES সারা দেশ বিষয়: