সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট The Daily Sylhet The Daily Sylhet প্রকাশিত: ৪:৪৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পিবিআইয়ের পক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আদালতে চার্জশিট জমা দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি। সেই সঙ্গে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এ মামলার তদারকি কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা। তিনি বলেন, মিতু হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করে চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব দিয়ে এ মামলার তদন্ত করা হয়েছে। পিবিআই কখনো পেশাদারিত্বের বাইরে যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ড কেন সংঘটিত হয়েছে তা অনেকবার বলেছি। বাকিটা আদালতে বিচারের সময় পাওয়া যাবে। সব রকমের তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আড়াই বছর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আমরা সাক্ষ্য প্রমাণ পেয়েছি কারা কারা জড়িত। বাবুল আক্তার কীভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তার তথ্য প্রমাণও পাওয়া গেছে। এদিকে, পিবিআইয়ের হেফাজতে থাকার সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দাবি করে গত ৮ সেপ্টেম্বর সংস্থাটির প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আবেদন করেছেন বাবুল আক্তার। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলার আবেদন করেন তিনি। মামলাটি আদেশের অপেক্ষায় আছে। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। এক পর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরে গত বছরের ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলার বাদী বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন। মামলায় বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। তারপর তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই। পিবিআই জানায়, একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মিতুর বাবা মোশাররফের মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা চলতে পারে না। সম্প্রতি আদালত এটিকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করেন। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে ও বিধিবিধান অনুসারে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাবুলের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলবে। মিতু হত্যার ঘটনায় দুটি মামলাই তদন্ত করছেন পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। এর মধ্যে বাবুল আক্তারের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলাকালে আদালতের আদেশে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি বাবুল আক্তারকে নিজের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আজ (১৩ সেপ্টেম্বর) বাবুলের করা মামলায় তার বিরুদ্ধেই চার্জশিট দেওয়া হলো। সিলেট/আবির SHARES আইন আদালত বিষয়: