মা কখনো হতাশ হতেন না : শেখ হাসিনা The Daily Sylhet The Daily Sylhet প্রকাশিত: ৬:২৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২৩ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আব্বা দুইটা বছর একটানা জেলের বাইরে ছিলেন কি না আমি জানি না, কিন্তু মাকে দেখেছি কখনো হতাশ হতেন না। সব সময় ঘর-সংসার সামাল দিতেন। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট ঘাতকের দল শুধু রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে হত্যা করেনি, হত্যা করেছে আমার মা, ভাই ও তাদের নববধূদের। পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, এ দেশের ৯০ ভাগ মানুষ দরিদ্র ছিল। প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বাস করত। তাদের ক্ষুধার অন্য যোগাতে পারত না। চিকিৎসা পেত না। তাদের থাকার কোনো ঘর ছিল না। এই বঞ্চিত মানুষগুলোর ভাগ্য গড়ে তোলা, এটাই ছিল জাতির পিতার একমাত্র লক্ষ্য ও সাধনা। সরকার প্রধান বলেন, আমার মায়ের মুখে কোনো দিন অভাব-অনটনের কথা শুনিনি। তিনি একটা সাহস নিয়ে চলতেন। ‘দলের ভেতরে সমস্যা দেখা দেয়। মওলানা ভাসানী দল ছেড়ে চলে যান। তখন দলের দায়িত্ব নেওয়া জন্য আমার বাবা মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন। আম্মা এ ব্যাপারে কোনো দিন অভিযোগ-অনুযোগ করেননি। তিনি হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। সব সময় স্বামীর পাশে থাকতেন। চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে জীবনে মাকে কখনো ভেঙে পড়তে দেখিনি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ’৬০ সালে বের হলেন, আবার ’৬২ সালে গ্রেপ্তার হন, ’৬৪ সালে আবার গ্রেপ্তার হন, আবার ’৬৬ সালে। জেলাখানায় মা যখন আব্বার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন, তখন বলতেন– তোমার ঘর-সংসার নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না, সেটা আমি দেখব। আব্বা কারাগারে থাকলে দলের কাজও তিনি করতেন। তিনি বলেন, বাবার সংগ্রামের ভেতরে ছিল দেশের স্বাধীনতা। এটা পৃথিবীর কেউ না জানুক, মা কিন্তু জানতেন। কারণ, আব্বা মার সঙ্গে সব সময় কথাগুলো বলতেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মাকেও পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। মামলায় মাকে জড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। একটা পর্যায়ে পাকিস্তানের কিছু নেতা ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা আসেন ৬ দফার পরিবর্তে ৮ দফার প্রস্তাব নিয়ে। আমার মায়ের অদ্ভুত স্মরণশক্তি ছিল। তিনি শুনতে এবং জেলখানায় গিয়ে আব্বার কাছে সেই কথাগুলো বলতেন। আব্বা যে নিদের্শনা দিতেন সেটা নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিতেন। সরকার প্রধান বলেন, আইয়ুব খান আব্বাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে আলোচনা করার কথা বলে। আমার মা সেখানেও বলেন, প্যারোলে না। আইয়ুব খান মামলা প্রত্যাহার করবে। সবাইকে ছেড়ে দেবে। মুক্ত মানুষ হিসেবে যাবে। যখন আব্বা প্যারোলে গেলেন না, আমাদের নেতারা বাড়িতে এসে বললেন, আপনি জানেন? তারা (পাকিস্তানিরা) তো মেরে ফেলবে, আপনি তো বিধবা হবেন। তখন মা বলেছিলেন, আরও তো নেতা আছে, তাদের স্ত্রীরাও বিধবা হবে। আমি একা সধবা থাকার চেষ্টা করব তাদের বাদ দিয়ে? আপনারা একটু চিন্তা করেন, কত দৃঢ় মনোবল ছিল আমার মায়ের। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। জাতীয়/আবির SHARES জাতীয় বিষয়: