মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সিলেট ও সুনামগঞ্জ

প্রকাশিত: ৫:২০ অপরাহ্ণ, জুন ২৩, ২০২২

প্রলংয়কারী বন্যা,বিভৎস তার রুপ
মানুষের ক্রন্দনে আসমানও কাঁপছে
জনপ্রতিনিধিরা পাশে নেই
বিত্তশালীরা বেখবর,বিক্ষুব্ধ জনগণ
সরকারী ত্রাণ অপ্রতুল, প্রচন্ড খাবার সংকট
জনপ্রশাসনে ঢিলেমী ও সময়ক্ষেপন
মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সিলেট ও সুনামগঞ্জ

স্মরণকালের সর্বনাশা ভয়াবহ বন্যায় কবলিত উত্তর সিলেটের বিস্তীর্ণ জনপদ। সিলেট নগরী, সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ শহর ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।বিভীষিকাময় ভয়াল বন্যায় জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে ও বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েছে সাধারণ জীবনযাত্রা।

গত ১৩ জুন দিবাগত রাত থেকে উপর্যুপরি বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ী ঢলে প্লাবিত হয়েছে গোটা জনপদ। পরিণত হয়েছে বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে। জলের ধাক্কা, পানির প্রবল স্রোত,ঘূর্ণিঝড় ও বানের তোড়ে ভেসে গেছে অনেক ঘর বাড়ী। মুহুর্তেই আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সারী, পিয়াইন আর সুরমার বিভৎস রুপ বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বন্যার ভয়াবহতা এমন মাত্রায় ছিল সুনামীর মতো ফিনকী দিয়ে পানি বৃদ্ধি হয়েছে। কাঁদো কাঁদো গলায় দীর্ঘ জীবন যুদ্ধে পানির ভয়াল থাবা থেকে বেঁচে উঠা জনৈক ভদ্রলোক বলেন, এতবড় জীবন সংগ্রাম আমার জীবনে আর কখনো করিনি। যেখানে যাই সেখানে পানি। পানি আর পানি। আঙ্গিনায় পানি আসার সাথে ঘরে ঢুকলাম। ঘরে পানি প্রবেশ করল। খাঁটে উঠলাম। খাঁটটিও মুহুর্তেই ডুবে গেল। টেবিলের উপর উঠলাম। টেবিলটারও শেষ রক্ষা হল না। শেষ পর্যন্ত জীবন বাঁচাতে ঘরের তীরে উঠলাম। তীরেও গিয়ে পানি ছুঁই ছুঁই করলো। এক পর্যায়ে তীরও ডুবে গেলো। পরবর্তীতে একজনের সহায়তায় পানিতে অনেকক্ষণ থাকার পর ডাঙায় উঠলাম। বর্ণণা করার সময় তিনি বলছিলেন, এই সব ঘটনাগুলো মুহূর্তেই ঘটেছে। কাল বিলম্ব না করেই বানের পানি দখল করেছে আমাদের ঘর-বাড়ী। বিতাড়িত হয়েছি আমরা। কি মর্মন্তুদ ভয়াবহ ঘটনা। গা শিউরে উঠে।মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচলাম এ জীবনে।

গত মাসের ভয়াল বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এবারকার বন্যায় ধাক্কা দিল সজোরে। মহাপ্লাবন বললেও অত্যুক্তি হবে না। মানুষের আহাজারী, ক্রন্দন আর বেদনায় আসমানও কাঁপছে।

#শুরুতে জনপ্রশাসনে ঢিলেমী ও সময়ক্ষেপন #

প্রশাসন যন্ত্র কি করছে সবার জানা আছে।এত বড় দুর্যোগের তুলনায় প্রশাসনের আরো বেশী সক্রিয়তা জনগণের প্রাপ্তি তো বটে। অধিকারও ছিল। ২ কেজি চিড়ার ঘোষণা। কয়েক হাজার প্যাকেট ত্রাণ। কয়েক মেট্রিক টন চাল। ভাল কথা।তবে শুধু এ দিয়েই দূর্যোগ মোকাবেলা সম্ভব!

সবার আগে প্রয়োজন ছিল উদ্ধার কার্য।কিন্তু জনপ্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণ প্রথম দিকে ঢিলেমী করেছেন। ফলে অনেক প্রাণকে সীমাহীন কষ্ট ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এক্ষেত্রে গোয়াইনঘাট এর ইউ এন ও যথাসময়েই রেসকিউ টিম গঠন করেছিলেন। তাঁকে ধন্যবাদ।

কিন্তু সরকারের জনবলতো অনেক। একটি উপজেলায় সরকারী কর্মচারী যারা আছে সবাইকে দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজে লাগাতে পারতেন ইউ এন ও। বন্যায় জনগণ তো আর সরকারী অফিসে যাচ্ছে না।স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত তো অকার্যকর হয়েছে। যাদের জন্য আপনাদের সেবা তাদেরকে উদ্ধার করতে সময়ক্ষেপন ভালো হয়নি।দুর্যোগ হলে মাস শেষে সরকারী কর্মচারীগণ ঠিকই মাহিনা পান। কিন্তু যারা মাহিনা দেয়, তাদেরকে সেবা ও সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়তে বিলম্ব,সচেতন জনগণ তা দুচোখেই দেখেছে।

নির্বাচনের সময় প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকসহ সবাইকে কাজে লাগানো হয়।আমার দেশে সরকারী চাকুরীতে পিয়ন হিসেবে যোগ দিয়েও নিজেকে রাজা ভাবে অনেকেই। পিয়ন আর ঝাড়ুদার ‘কর্মচারী’ আর অফিস সহকারী, ক্লার্ক, গাড়ী চালক থেকে শুরু করে সবাই নিজেকে ‘অফিসার’ ভাবে, ‘বড় কর্তা’ মনে করে। তারা ভূলে যায়, ‘সচিব থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী’ সকলেই ‘গভর্মেন্ট এমপ্লয়ী বা কর্মচারী’। রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কেউ ই তো ভি আই পি নন। এটি সবাইকে বুঝতে হবে। জাতীয় দুর্যোগ ও দু:সময়ে সবাইকে কাজ করা উচিত। আমরা দেখলাম ইউ এন ও, ওসি আর পুলিশ ফোর্স ছাড়া সরকারী অন্যান্য কর্মচারীদের এ দুর্দিনে কাউকে আর কাছে পাওয়া গেল না সহজেই। ঐ সময়েই অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার, বিজিবি জোয়ানদের কাজে লাগানো যেত।ইউ, পি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের পাশে দেখা যায়নি। জনগণ বিক্ষুব্ধ।

#সেনাবাহিনী ও পুলিশ মানবিক বাংলাদেশের প্রতীক পাশে নেই সিংহভাগ জনপ্রতিনিধি, বেখবর বিত্তশালীরা#

সেনাবাহিনীকে তখনই নামানোর প্রয়োজন ছিল ।কিন্তু, যথেষ্ট দেরি হয়েছে।সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী দুর্যোগ মোকাবেলায় সাহসী ও দৃপ্ত কদমে কাজ করছে।পুলিশ তার সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। বাড়ী বাড়ী গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম ও ত্রাণ পৌঁছানোর কাজ করছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এই বাহিনীগুলো মানবিক বাংলাদেশের প্রতীক। এ দুর্যোগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এনজিও, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন,দেশ ও প্রবাসের বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ সহযোগিতা করতে আসলেও দেখা মিলেনি সিংহভাগ জনপ্রতিনিধির।পাওয়া যায়নি বিত্তশালীদের।বিক্ষুব্ধ জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মেম্বার চেয়ারম্যান এরা গেলা কই। কিচ্ছু দেউক না, আমরারে তো দেখি যাইত আছিল।” এসময়ে প্রশাসন, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ একযোগে কাজ করতে পারত।জনপ্রতিনিধিগণ পাশে দাঁড়ালে বিপদগ্রস্ত লোকজন সাহস পাবে। সিলেটের মেয়র আরিফসহ হাতে গোনা কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ছাড়া আর কাউকেই দেখা যাচ্ছে না মানুষের পাশে ।

#মানুষের হাতের কামাই বন্যা সিলেটবাসী এর আগে কখনো এমন দেখেনি#

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খুব সুন্দর করে এ পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। ভারসাম্যপূর্ণ সাজানো এ বাগানকে যখন আমরা ক্ষতবিক্ষত করি তখনই বিপর্যয় নেমে আসে। ইচ্ছেমত নদীপথ বদলানো, পানির স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রোধ, হাওড়ের বুক চিড়ে রাস্তা, নদীতে চর, জলাশয় ভরাট, অপরিকল্পিত ব্রীজ ইত্যাদি করে ফেলি। তখনই বিরুদ্ধ হয় প্রকৃতি ও বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় অতিমারী, মহামারী, বন্যা, খরা ইত্যাদি হয় এবং জলবায়ুর উপর আঘাতে অসময়ে বন্যা, প্রচন্ড বৃষ্টি ইত্যাদি হয়ে থাকে।

“সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় সম্প্রতি পৌনঃপুনিক বন‍্যায় মানুষের বাড়িঘর, সম্পত্তির ব‍্যাপক ক্ষতি সাধিত হয় মুলত এ কারণে। ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ইত্যাদি নির্মাণ করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত ও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। মেঘালয়ে ব‍্যাপকভাবে পাহাড় কাটার ফলে পানি প্রবাহ তার স্বাভাবিক গতিতে নিচের দিকে নেমে আসছে না এবং অতিরিক্ত পানি ও অন‍্যান‍্য পানিবাহিত বর্জ‍্য নিয়ে আসছে।

এদিকে সুরমা নদীর উৎস স্থল অমলসিদ নামক স্থানে চর জেগে উঠে বরাক নদের পানি সুরমায় প্রবেশ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে। এখন শুষ্ক মৌসুমে লোভাছড়ার পানিই সুরমা নদী হয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সুরমা নদীর স্রোতের গতি অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এর সাথে স্থানীয় দুর্বৃত্ত কর্তৃক এমনকি কোন কোন স্থানে সরকারি প্রকল্পের নানা অপরিণামদর্শী কার্যক্রম নদীর জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুরমার সহিত সংযুক্ত নানা উপনদী ও শাখা-প্রশাখা ইতোমধ্যে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। নদীতে প্রকাশ‍্যে নানারূপ ক্ষতিকর বর্জ‍্য বিশেষ করে প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ ফেলা হচ্ছে। সরকার বা দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ এসব আমলে নিচ্ছে না।

এছাড়া নদী, জীবন ও প্রকৃতির পক্ষে ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত প্রভাবশালী মহলকে আশ্রয় প্রশ্রয় প্রদান তথা সুশাসন প্রতিষ্ঠার দৃশ্যমান অনাগ্রহ আজকের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।শাসকশ্রেণির অনুসৃত নীতি ও আরোপিত উন্নয়ন দর্শনের ফলশ্রুতিতে সংগঠিত এ দূর্বিপাককে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে চিহ্নিত করে রাষ্ট্র ও সরকারের দায় এড়িয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই।

এত ভয়াবহ বন্যা সিলেট বাসী আগে কখনো দেখেনি।
মানুষের কষ্টের কোন শেষ নেই। গরু , ছাগল হাঁস মুরগি সব হারিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী প্রায় দিশেহারা।

পৃথিবীর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত অঞ্চল ভারতের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ছাড়িয়ে গেছে ১২২ বছরের ইতিহাস। উজানের পাহাড়ী ঢল,উপর্যুপরি মুষলধারে প্রচন্ড বৃষ্টি, বজ্রপাত, দমকা হাওয়ায় মহাপ্লাবনে প্লাবিত সিলেট,সুনামগঞ্জ অঞ্চল।

#সরকারী ত্রাণ অপ্রতুল, প্রচন্ড খাবার সংকট#

এখনো অনেক জায়গায় ত্রাণ পৌঁছায়নি। কোন জায়গায় যাচ্ছে, কোথায় পাচ্ছে না। এগুলো কেউ মনিটরিং করছে না।এদিকে বাজারে খাবার সংকট।একদিকে আকাশচুম্বী দাম অন্যদিকে পাওয়াই যাচ্ছে না পণ্য। সরকারী ত্রাণ লাখ লাখ পানিবন্দী মানুষের জন্য বিন্দুমাত্র জল ছাড়া কিছুই নয়। তবে বেসরকারীভাবে
সাধারণ মানুষের যে অযুত ভালোবাসা সিলেট পাচ্ছে তা অনন্য ! ব্যক্তিগত উদ্যেগ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যেগে লাখ লাখ টাকার ত্রান বিতরণের অনন্য নজির দেখছে সিলেট । বিপদে এই দেশের সাধারণ মানুষের যে একাত্মতা তা উদাহারন হয়ে থাকবে ! সত্যিই বিরল । অসংখ্য প্রবাসীরা সহায়তা পাঠিয়েছেন যা দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি তাদের মমত্ববোধের প্রমাণ। অসংখ্য সংগঠনের ও স্ব উদ্যোগে শত শত ভলানটিয়াররা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন, বিতরণ করছেন ত্রাণ। এটাই বন্যার্তদের প্রতি ভালোবাসা।মানুষের পাশে দাঁড়াতে হলে এমপি মন্ত্রী নয় ইচ্ছাই যথেষ্ট।

#উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যে সেনাবাহিনী #

দুর্যোগ ও সংকট মোকাবেলায় সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখে থাকে। এবারের বন্যায় উদ্ধার ও ত্রাণকার্যে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অবদান আমরা কখনো ভূলব না। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে জনপ্রশাসন যখন ব্যর্থ হয়েছিল তখন সেনাবাহিনী কক্সবাজারের উখিয়া, কুতুপালং, হাকিমপুর ক্যাম্পে শৃংখলা আনয়ন, সুষ্ঠুভাবে রিলিফ বন্টন, আবাসন ব্যবস্থা, খাদ্য ও পানীয় জলের ব্যবস্থা ও চিকিৎসাসেবা দিয়েছিল।সেনাবাহিনী কে সময়মত দায়িত্ব দিলে ও তারা পর্যাপ্ত ক্ষমতা, সুযোগ সুবিধা পেলে সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব।

#কিছু অমানুষ ও সুবিধাভোগী বিপদে মানুষকে ঠকায়#

প্রলংয়কারী বন্যায় গোটা জনপদ যখন পানির নিচে। অসহায় মানুষ। তখন কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের মাত্রাতিরিক্ত দাম বাড়িয়েছেন, সিএনজি অটোরিকশা অস্বাভাবিক ভাবে ভাড়া গুণছেন, নৌকার মাঝিরা অযৌক্তিক খরচ চাচ্ছেন, এরা আসলে অমানুষ, সুবিধাভোগী। এরা বিপদ, আপদ বুঝে না। দু:সময়কে তাদের কাছে তাদের সুসময় হিসেবে বেছে নেয় তারা। রিলিফ বিতরণকালে একটি এলাকায় আড়াই ঘন্টা অভিনয়ের পর নৌকার মালিক নৌকা দিয়েছে। ততক্ষণ ত্রাণবাহী গাড়ী বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় দাঁড়ানো ছিল।বাইরের লোকজনদের বেশী হয়রানী পোহাতে হয় এদের কাছে। রোহিঙ্গাদের যখন মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল, তখন তিন দিন চারদিন না খেয়ে থাকা মিয়ানমার সেনাদের হাতে নির্যাতিত অসহায় মানুষের কাছ থেকে নাফ নদী পার করে এরকম হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল ডাকাতরা। যাদের টাকা ছিল না তাদের হালের গরু, মেয়েদের গলার চেইন ও নৌকা ভাড়া বাবদ দিতে হয়েছে। এরকম অমানুষ সব সময় সব জায়গায় থাকে।

#মানবিক বিপর্যয়ের মুখে সিলেট -সুনামগঞ্জ বানভাসীদের পাশে দাঁড়ান #

ভয়াল বন্যার বিভৎস রুপ, বিভীষিকাময় পরিস্থিতির মুখোমুখি সিলেট ও সুনামগঞ্জের লাখ লাখ মানুষ। সুনামগঞ্জে তো পর্যাপ্ত পরিমাণে রিলিফই পৌঁছায়নি এখনো। সিলেট শহরের লোকজন অনেক ত্রাণ পাচ্ছে। অথচ গ্রামগুলোতো সাগরে আছে। সেদিকে স্বেচ্ছাসেবীদের নজর দিতে হবে। পর্যাপ্ত ত্রাণ দিচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। কোথাও কোথাও সেগুলো সিন্ডিকেট নির্ভর হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এতে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন মনে করছেন সাধারণ মানুষ।

প্রলংয়কারী এ বন্যায় জনজীবন বিধ্বস্ত। পানি কমলেই আরেকটি বিশাল যুদ্ধ সামনে পড়বে। ঝুঁকিতে অনেক পরিবার থাকবে। গৃহ নির্মাণ, রাস্তাঘাট ইত্যাদি ও কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষজনের আবাসন ও চাহিদা মেটানো এক বড় দায়। সব মিলিয়ে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে এগুচ্ছে এ জনপদ। আবার যে পাহাড়ী ঢল আসবে না, তা তো বলা যায় না।

মানুষ মরে গেলে সম্পদ ভান্ডার,রাষ্ট্রীর কোষাগার, রেমিটেন্স, ব্যাংক ভর্তি টাকা, বিত্তবানদের গচ্ছিত সম্পদ ইত্যাদি কোন কাজে আসবে না।তাই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনিবার্য দাবী সচেতন মহলের।

অতিমারী, মহামারী, বন্যা, প্রাকৃতিক অন্যান্য দূর্যোগ ও জাতির সংকট কালে তরুণ, যুবক ও ছাত্ররাই সবচেয়ে বেশী অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। যুব সমাজ এক অমিত সম্ভাবনাময় ঐক্যবদ্ধ একটি শক্তির নাম। তারুণ্যের শক্তির কাছে সবকিছু পরাজয় বরণ করে।
তাই দু:সময়ে,দুর্যোগে,দুর্দিনে ও ক্রান্তিকালে মানুষের পাশে দাঁড়াতে সব এলাকার তরুণদের এগিয়ে আসা উচিত।

সিলেটেরকন্ঠ/আবির