দীর্ঘ ৫৭ বছর পর বুধবার (১ জুন) ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হলদিবাড়ী রেলপথে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে যাত্রীবাহী ট্রেন মিতালী এক্সপ্রেস।
২০২১ সালের ২৭ মার্চ মিতালী এক্সপ্রেস চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু উদ্বোধনের পর করোনা পরিস্থিতি ও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় আটকে যায় ট্রেন চলাচল। উদ্বোধনের ১৪ মাস পর সব জটিলতা কাটিয়ে বুধবার ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন।
বুধবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে মিতালী এক্সপ্রেস হলদীবাড়ী রেলস্টেশনে পৌঁছাবে ১২টা ৫৫ মিনিটে। সেখান থেকে বাংলাদেশের নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটী রেলস্টেশনে এসে পৌঁছাবে দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে। রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনে পৌঁছাবে মিতালী এক্সপ্রেস।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিলাহাটী রেলস্টেশনের মাস্টার রুহুল আমিন। তিনি আরো জানান, মিতালী এক্সপ্রেস বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ছেড়ে চিলাহাটী রেলস্টেশনে পৌঁছাবে ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে এবং নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছাবে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে।
আরো জানা গেছে, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি রুটে চলবে সপ্তাহে দুইদিন। ঢাকা থেকে ভারতে যাবে সোম ও বৃহস্পতিবার। ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকায় আসবে রোববার ও বুধবার । এ ট্রেনে থাকছে ১০টি কোচ। এর মধ্যে ৪টি এসি বার্থ, ৪টি এসি চেয়ার এবং ২টি ব্রেকভ্যানসহ পাওয়ার কার।
সূত্রে জানা গেছে, মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য নতুন করে ভাড়ার নির্ধারণ করেছে দুই দেশের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এসি বার্থ ৫ হাজার ২৫৪ টাকা, এসি সিট ৩ হাজার ৪১৫ টাকা, এসি চেয়ার ২ হাজার ৭৭৭ টাকা। ট্রেনটি বাংলাদেশ থেকে রাতে চলাচল করবে বিধায় এসি বার্থ’র জন্য বেডিং ভাড়া বাবদ ২শ টাকা যোগ করে সাকুল্যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে রেল বিভাগ। তবে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত মূল ভাড়ার ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। এ ট্রেন থেকে যা আয় হবে তার ৮০ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ ও ২০ শতাংশ পাবে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সরকারি সফরে ভারতে আছেন। তিনি ও ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ১ জুন যৌথভাবে ভার্চুয়াল ফরম্যাটে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের সদর দফতর থেকে ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ যাত্রার উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
মিতালী এক্সপ্রেস ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তৃতীয় যাত্রীবাহী ট্রেন। এরই মধ্যে দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল করছে। ট্রেন দুটি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কাটিয়ে দীর্ঘ দুই বছর পর রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে।
ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস প্রথম চালু হয় ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু ও লালন সেতু হয়ে দর্শনা-গেদে রুটে এ ট্রেন চলাচল করে সপ্তাহে পাঁচদিন। খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন ট্রেন চালু হয় ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর। বেনাপোল-পেট্রাপোল রুটে সপ্তাহে দুইদিন চলাচল করে এটি। এছাড়া বিরল-রাধিকাপুর, রোহনপুর-সিঙ্গাবাদ রুটে মালবাহী ও পার্সেল ট্রেন চলাচল করছে।
সিলেট/আবির
প্রধান সম্পাদকঃ আজিজুল হক চৌধুরী
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আনোয়ারুল হক রুবেল
বার্তা সম্পাদকঃ সুজন আহমদ