ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সিলেট অঞ্চল ও সীমান্তবর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেটে সুরমা, কুশিয়ারা ও সারিগোয়াইন নদী তিনটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে।
নদী বিপদসীমা অতিক্রম করায় জেলার গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বড় কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে আজ (বুধবার) দুপুর ১২টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদী জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার এবং সারিগোয়াইন নদী জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আকস্মিক বন্যায় গোয়াইনঘাট উপজেলায় সারিঘাট-গোয়াইনঘাট সড়কের দুটি পয়েন্ট এবং যথাক্রমে গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের শিমুলতলা পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে বলে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। এসব সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উপজেলার রুস্তমপুর, লেংগুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাও, পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলংয়ে প্লাবনের পরিমাণ বেশি হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য ইতিমধ্যে ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে।
গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: তৌহিদুল ইসলাম ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে বন্যা দুর্গত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
তিনি জানান, যে সকল এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবিত হতে পারে সে সকল এলাকার ঘরবাড়ি, বাজার ও দোকান সমূহ থেকে জানমাল নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার জন্য স্থানীয়দের সতর্ক করা হচ্ছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও প্লাবণ প্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এদিকে জৈন্তাপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলের পানিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অনেক গ্রাম ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল, মযনাহাটি, বন্দরহাটি, মেঘলী, তিলকৈপাড়া, ডিবিরহাওর, ফুলবাড়ী, টিপরাখরা, খলারবন্দ, মাঝেরবিল, হর্নি, নয়াবাড়ী, কালিঞ্জিাদবাড়ী, জৈন্তাপুর ইউনিয়নের লামনীগ্রাম, মোয়াখাই, বিরাইমারা, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, লক্ষীপুর, কেন্দ্রী, খারুবিল, নলজুরী, শেওলারটুক, বাওনহাওর, চারিকাটা ইউনিয়নের লাল, থুবাং, উত্তর বাউরভাগসহ বিভিন্ন গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।
জৈন্তাপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া জানান, টানাবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট আকস্মিত বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।
তিনি জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে। বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সকল নদী পথে যাতায়াতকারীদের সর্তকভাবে চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সিলেট/আবির
প্রধান সম্পাদকঃ আজিজুল হক চৌধুরী
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আনোয়ারুল হক রুবেল
বার্তা সম্পাদকঃ সুজন আহমদ