‘বিএনপি নেতারা নিরাশার গল্প শুনিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করছে’

প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২২

 

বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত নিরাশার গল্প শুনিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তারা খুব সচেতনভাবেই এটি করছে যাতে করে মানুষ আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে; সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। একই সাথে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরির পাঁয়তারা করছে। বৈশ্বিক এই সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে ভালো রয়েছে বলে জানান কাদের।

শুক্রবার (২২ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের— মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দের বক্তব্যকে নির্লজ্জ মিথ্যাচার, উসকানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করে তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মহামারির অভিঘাতের মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ সারা বিশ্বকে এক সংকটের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সকল রাজনৈতিক দল দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু বিএনপি নামক রাজনৈতিক অপশক্তিটির কাছ থেকে জাতি কখনও দায়িত্বশীল কোনও আচরণ পায়নি। বরং তারা সব সময়ই সংকটময় মুহূর্তে জাতির ঐক্যের দুর্গে হানা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পাঁয়তারা করে। বৈশ্বিক এই সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে ভালো রয়েছে। ঠিক যেমনটি করোনাকালেও ছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে সরকার সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শেখ হাসিনা মানেই সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দানের নেতৃত্ব। শেখ হাসিনা মানেই দুর্যোগে সুযোগ সৃষ্টির কারিগর। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশের জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল সংকট সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। অথচ সংকট মোকাবিলায় জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসকে নস্যাৎ করতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ প্রতিনিয়ত নির্লজ্জ মিথ্যাচার, উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে আসছে। জনগণকে আস্থায় রাখতে না পেরে বিএনপি একটি হতাশাবাদী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। বিএনপি নেতারা প্রতিনিয়ত নিরাশার গল্প শুনিয়ে জাতির সঙ্গে তামাশা করছে। তারা খুব সচেতনভাবেই এটি করছে যাতে করে মানুষ আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে; সামাজিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়। একই সাথে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে সরকারবিরোধী মনোভাব তৈরির পাঁয়তারা করছে।

তিনি বলেন, হীন রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের অপচেষ্টায় শান্তিপ্রিয় মানুষকে আত্মঘাতী করে তোলার মতো দুরভিসন্ধি বিএনপির অর্বাচীন রাজনীতির পরিচায়ক।

বিএনপি দেশের জনগোষ্ঠীর সামনে বিভ্রান্তির ধোঁয়া ছড়িয়ে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে চায় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা কথায় কথায় বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তুলনা করে দেশের জনগণের আত্মবিশ্বাস ক্ষুণ্ণ করতে চায়। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাকে সমান্তরালে রেখে তুলনা করার কোনও সুযোগ নেই। তারা মূল্যস্ফীতি নিয়ে কথা বলছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে জনগণের উপর চাপ বাড়ে একথা সত্য। সেদিক বিবেচনায় রেখে সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে সরকার মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণ করে ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে রেখেছে।

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সময় আসলেই বিএনপি যে কোনও উপায়ে ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। আগামী নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়ার জন্যও তারা জনগণের সামনে সুনির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারছে না। তাই বিএনপি নেতারা জাতির সামনে বিভ্রান্তিকর বক্তৃতা ও বিবৃতি প্রদান করে চলেছে।

জনগণের আত্মবিশ্বাস ধ্বংস করা কোনও রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য হতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবো, সামনের সংকট মোকাবিলার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার না করে দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করুন। তাতে দেশের মানুষ উপকৃত হবে এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতি সমৃদ্ধ হবে।

সিলেট/আবির