বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার ধার করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো হচ্ছে। বৈদেশিক দেনা পরিশোধ এবং নির্ধারিত সময়ের পর ব্যাংকের ধার করা ডলার ফেরত দেওয়ার ফলে রিজার্ভ আবার কমে যাচ্ছে। এ নিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে বেশ ওঠানামা চলছে। এতে রিজার্ভে অস্থিরতা বাড়ছে।
রিজার্ভ ধারণে আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার ধার করে তা বাড়াচ্ছে। কিন্তু দেনা পরিশোধের চাপে রিজার্ভ ধরে রাখতে পারছে না। ফলে রিজার্ভ আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রার নিচে নেমে গেছে। গত মার্চ পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৬ কোটি ডলার রিজার্ভ রাখার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল আইএমএফ। তাদের প্রকৃত হিসাবে ওই পরিমাণে রিজার্ভ নেই।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশের রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫৭ কোটি ডলার। ৬ মার্চ পর্যন্ত তা আরও বেড়ে ২ হাজার ১১৭ কোটি ডলারে ওঠে। মূলত এশিয়ার ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দেনা পরিশোধের জন্য রিজার্ভ বাড়ানো হচ্ছিল। ৭ মার্চ আকুর দেনা বাবদ ১২৯ কোটি ডলার পরিশাধের বার্তা প্রদান করে। রিজার্ভ সমন্বয়ের পর ১১ মার্চ তা আবার কমে ১ হাজার ৯৯৮ কোটি ডলারে নেমে যায়। এরপর থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার ধার করায় রিজার্ভ আবার বাড়তে শুরু করে। ১৪ মার্চ রিজার্ভ বেড়ে আবার ২০০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে। ১৮ মার্চ আরও বেড়ে তা ২ হাজার ১০ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। ব্যাংক থেকে ধার করা ডলার পরিশোধ করার পর রিজার্ভ আবার কমে ১ হাজার ৯৯৯ কোটি ডলারে নেমে যায়। জ্বালানি উপকরণ আমদানির দেনা পরিশোধ করার পর রিজার্ভ আবার ২৮ মার্চ ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারে নেমে যায়। সর্বশেষ ৪ এপ্রিল রিজার্ভ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবার ৫১ কোটি ডলার বেড়েছে। একই দিনে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৯৬ কোটি ডলার।
একই সময়ে গ্রস রিজার্ভও বেড়ে আবার ২৫ বিলিয়ন ডলারে ওঠেছে। গত সপ্তাহে তা ২৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছিল। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সোয়াপ উপকরণের আওতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার ধার করা শুরুর পর থেকে রিজার্ভ বেশ ওঠানামা হচ্ছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সোয়াপ পদ্ধতিতে ডলার ধার করা শুরু করে। ব্যাংক থেকে ডলার ধার করলে রিজার্ভ বাড়ছে। কোনো বড় দেনা পরিশোধ বা ব্যাংক থেকে ধার করা ডলার ফেরত দিলে রিজার্ভ আবার কমে যাচ্ছে। এতে রিজার্ভে অস্থিরতা বাড়ছে।
এদিকে ব্যাংক থেকে ডলার ধার করার বিপরীতে ব্যাংকগুলোতে সমহারে টাকা ধার দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকটের সাময়িক উপশম হচ্ছে। কিন্তু ব্যাংকের প্রয়োজনে বৈদেশিক দেনা শোধ করতে নির্ধারিত সময়ের পর ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ফেরত নিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া টাকাও ফেরত দিতে হয়। তখন ব্যাংকগুলো আবার তারল্য সংকটে পড়ে। এতে ব্যাংকগুলোর তারল্য পরিস্থিতিতেও অস্থিরতা চলছে। ব্যাংকে তারল্য আগে বাড়ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তা কমে যাচ্ছে। গত জুন থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তারল্য কমেছে ১৫ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ ও বাণিজ্য/আবির
প্রধান সম্পাদকঃ আজিজুল হক চৌধুরী
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আনোয়ারুল হক রুবেল
বার্তা সম্পাদকঃ সুজন আহমদ