দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমা দেওয়ার সিস্টেম চালু করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়াও নির্বাচনি বিভিন্ন তথ্য ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা এবার অ্যাপে সন্নিবেশ করতে যাচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রযুক্তিগত এ দুটি কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে রবিবার (১২ নভেম্বর)। সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৈরি হলেও উপনির্বাচন এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকারের নির্বাচনেও এই ব্যবস্থা ব্যবহার করা হবে।
এদিন নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে বেলা ১১টায় অনুষ্ঠেয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এ বিষয়ে ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিল ‘অনলাইন নমিনেশন সাবমিশন (ওএনএসএস) ও ‘স্মাট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বিডি’ মোবাইল অ্যাপ চালু হচ্ছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা দেওয়া, প্রভাবশালীদের প্রভাব রোধে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। আর নির্বাচনি অ্যাপের মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র, ভোটার নম্বর, ফলাফল ইত্যাদি প্রার্থীরা ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন।
প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার এই পদ্ধতি চালু করতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২১ কোটি টাকা। যার মধ্যে সফটওয়্যারের পেছনে ৯ কোটি ১১ লাখ এবং হার্ডওয়ারের পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর মেয়াদ ১০ বছর।
ইসি সূত্র বলছে, অ্যাপে চারটি বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ভোটারগণ তার ভোটকেন্দ্রটি এই অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন; সঙ্গে সুবিধা পাবেন কোন পথ দিয়ে কেন্দ্রে পৌঁছাবেন তার পথনির্দেশনা, নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তারা প্রতি দুই ঘণ্টা পর পর কতো ভোট পড়লো তার একটি তথ্য দেখতে পারবেন এবং স্থানীয় সরকারের যে নির্বাচনগুলো হয় তার বিস্তারিত তথ্য যেমন, কবে নির্বাচনটি হয়েছিল, ভোটার সংখ্যা কতো ছিল এবং নির্বাচনের মেয়াদ কবে শেষ হবে সেটিও জানা যাবে অ্যাপটির সহায়তায়।
নির্বাচনি অ্যাপে দুই ধরনের ব্যক্তির প্রবেশাধিকার থাকবে। একটির ক্ষেত্রে কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও কমিশনের প্রবেশাধিকার পাবেন। এ ধরনের পরিবেশকারীরা রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, ডিসি, এসপি, ওসি দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তার পরিচয় ও ফোন নম্বর ইত্যাদি দেখতে পাবেন।
অপরদিকে ভোটার, রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, রিটার্নিং কর্মকর্তা, সচিব, কমিশনসহ সবার প্রবেশাধিকারে যেসব সুবিধা থাকবে তা হলো— নির্বাচনি এলাকার নাম ও নম্বর; প্রার্থীর নাম, পরিচিতি, ছবি, দলীয় পরিচয় ও মার্কা, হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য; ভোট কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য (কেন্দ্রের নাম, কেন্দ্রের নম্বর) এবং কেন্দ্র ও ভোটারদের তথ্য (ভোটাররা যাতে অ্যাপে দেখতে পারেন তাকে কোন কেন্দ্রে ভোট দিতে হবে)।
এছাড়াও কোন কোন আসন বা ভোট কেন্দ্রে ইভিএম ও কোন কোন আসন কিংবা ভোট কেন্দ্রে ব্যালটে ভোট হবে (অবশ্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কোনও ইভিএম হচ্ছে না) এবং কেন্দ্র ও আসন ভিত্তিক মোট ভোটার সংখ্যা (পুরুষ ও নারী ভিন্নভাবে)।
এছাড়াও ফলাফলও থাকবে অ্যাপে। নির্বাচন শেষে আসন বা কেন্দ্রভিত্তিক কোন প্রার্থী কত ভোট পেয়েছেন, তা সংখ্যায় ও চার্টের মাধ্যমে প্রদর্শন এবং দল ভিত্তিক প্রাপ্ত আসন সংখ্যাও দেখা যাবে। নিকটতম প্রার্থীর পরিচিতি ও প্রাপ্ত ভোট সংখ্যাও থাকবে এই অ্যাপে। তাছাড়া সময় ও চাহিদার প্রয়োজনে এই অ্যাপে নতুন নতুন তথ্য সংযোজন ও বিয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা।
রাজনীতি/আবির
প্রধান সম্পাদকঃ আজিজুল হক চৌধুরী
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ আনোয়ারুল হক রুবেল
বার্তা সম্পাদকঃ সুজন আহমদ