বিয়ানীবাজারে টানা বর্ষণে ফসল ও মাছের ক্ষতি প্রায় ৬ কোটি টাকা The Daily Sylhet The Daily Sylhet প্রকাশিত: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২৩ সিলেটজুড়ে প্রবল বর্ষণ নেমেছিল হঠাৎ করে। টানা বর্ষণে বিয়ানীবাজার উপজেলায় ফসল ও মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে ৩৪৬ হেক্টর ক্ষেতের আমন ধান ক্ষতির মুখে পড়েছে। সেইসঙ্গে শীতকালীন আগাম সবজি ৪৩ হেক্টর, ২১ হেক্টর শাক-সবজি ও ১১ হেক্টর মরিচ ক্ষেতও সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া পানিতে ভেসে গেছে ১৮২ টি জলাশয়। এসব জলাশয়ের আয়তন ৫শ’ ৯৩ বিঘা। সবমিলিয়ে কৃষি ও মৎস্য খাতে মোট সাড়ে ৫ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হবে বলে ধারণা করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এই হিসাবের চেয়ে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত ৪-৫ দিনের প্রবল বর্ষণে উপজেলার দশটি ইউনিয়নেই কমবেশি আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না থাকায় তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। ফলে কৃষকের চোখের সামনেই তাদের স্বপ্ন আধা পাকা ও কাঁচা ধান পচে নষ্ট হয়ে যায়। এতে ক্ষতি হয় সাড়ে ২ কোটি টাকা। পাশাপাশি রকমারি সবজি ক্ষেতেও পানি জমে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া রেকর্ড বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৯০টি জলাশয় ভেসে যাওয়ায় ৪০-৫০ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে সূত্র জানায়। উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের কৃষক মুত্তালিব আলী বলেন, তাদের ফসলি মাঠে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়। তাই অনেকটা আগেভাগেই নিজস্ব নয় বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলেন। যাতে ধান কাটা-মাড়াই শেষেই আলু লাগাতে পারেন। এই টানা ভারী বৃষ্টিতে পাকা ও আধা পাকা ধান ক্ষেত সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে যায়। কয়েকদিন পানিতে হাবুডুবু খাওয়ার পর অবশেষে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এক-মুঠো ধানও ঘরে তোলা সম্ভব নয়। এতে চোখে-মুখে অন্ধকার দেখছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, অনুরূপ চিত্র উপজেলার তিলপাড়া, শেওলা, কুড়ারবাজারসহ এলাকার ফসলি মাঠে। এসব এলাকার সিংহভাগ কৃষকই অনুরূপ মন্তব্য করেন। এদিকে প্রবল বর্ষণে জলাশয় ভেসে যাওয়ায় অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাছ চাষিরা। ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষি আকরাম হোসাইন বলেন, তিনি ৪টি জলাশয়ে রকমারি মাছ চাষ করেন। এরমধ্যে তিনটি জলাশয় আংশিক আর তিনটি জলাশয় সম্পূর্ণ ডুবে যায়। এতে অনুমান ২৫-২০ লাখ টাকার মতো মাছ পানিতে ভেসে গেছে। একইভাবে চাষি লিটন মিয়া, কামরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, আফছার আলীর শতশত বিঘা জলাশয় পানিতে ডুবে লাখ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে বলেও মন্তব্য করেন। জানতে চাইলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান জানান, অতি বৃষ্টিতে অনেক জলাশয় ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে মাছ ভেসে যাওয়ায় চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নির্দিষ্ট তথ্যের মাধ্যমে এসব চাষিদের ক্ষয়-ক্ষতি নির্ধারণ করা হবে বলে জানান তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান হাকীম বলেন, প্রবল বর্ষণে চলতি মৌসুমের আমন ও সবজি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। যা নির্ধারণে তার দপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। সিলেট/আবির SHARES সারা দেশ বিষয়: