বাজেট কী ও কেন The Daily Sylhet The Daily Sylhet প্রকাশিত: ৩:২১ অপরাহ্ণ, জুন ১, ২০২৩ একটি অর্থবছরে সরকারের অনুমিত আয় এবং ব্যয়ের হিসাবই হলো বাজেট। একটি দেশের নির্বাচিত সরকারকে দেশের যখন দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন সরকার আগাম কিছু পরিকল্পনা করে দেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ করে। যেটি আসলে বাজেটের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ রুপ পেয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট বছরে কোথায় কত টাকা ব্যয় হবে, সেই পরিকল্পনার নামকেও বাজেট বলা হয়ে থাকে। জাতীয় বাজেটের মূল অংশ দুটি। প্রথম অংশ রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত। এই অংশে সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থা ও আদায় সংক্রান্ত প্রস্তবসমূহ থাকে, দ্বিতীয় অংশে থাকে সরকারি ব্যয়ের প্রস্তাবসমূহ। প্রতি বছর একটি আইনপ্রস্তাব বা ‘বিল’ আকারে জাতীয় বাজেট জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়। একে বলা হয় অর্থ বিল। সংসদ সদস্যরা অনুমোদনের পর এটি আইনে পরিণত হয়। বাংলাদেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজস্ব প্রস্তাবসমূহ প্রণয়ন করে এবং অর্থ বিভাগ ব্যয় প্রস্তাবসমূহ প্রণয়ন করে। বাজেট কেন উৎপাদন, উন্নয়ন ও কল্যাণ—একটি দেশের বাজেটের মূলত এই তিনটি প্রধান লক্ষ্য থাকে। এছাড়া নানা প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে দেওয়া বাজেটের মাধ্যমে একটি দেশের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা থাকে। সেইসঙ্গে প্রচেষ্টা থাকে উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার। সব মিলিয়ে সবার কল্যাণ সাধনের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। যে কোনো বাজেটের দুটি দিক থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ফিস্ক্যাল দিক আর একটি মানিটারি দিক। বাজেটে দেশের অর্থনীতির প্রায় সব দিকই বিবেচনায় নিতে হয়। বাজেটের মূল লক্ষ্য থাকে কয়েকটি। যেমন—জিডিপি প্রবৃদ্ধি কতটা অর্জিত হবে, মূল্যস্ফীতি কীভাবে সহনীয় পর্যায়ে রাখা যাবে, বাজেট ঘাটতি কীভাবে কমিয়ে আনা যাবে এবং দারিদ্র্যবিমোচন কীভাবে সম্ভব হবে। বাংলাদেশের বাজেট প্রণয়ন করা হয় ১২ মাসের জন্য যা চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে পরবর্তী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকে। প্রতি বছর জুন মাসে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সরকারের পক্ষে অর্থমন্ত্রী বাজেট বিল পেশ করেন। এর আগে এই বাজেট বিল ক্যাবিনেট সভায় বিবেচনা ও অনুমোদন করা হয়। এবারের বাজেট ও লক্ষ্য আসন্ন বাজেট নিয়ে সবার মধ্যেই এক ধরনের উত্কণ্ঠা লক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ আগামী অর্থবছরের বাজেট এমন সময়ে ঘোষিত হতে যাচ্ছে, যখন বিশ্ব অর্থনীতি নানা সমস্যায় জর্জরিত। বিশ্ব অর্থনীতিতে বর্তমানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ কোনো কোনো দেশে মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিক মাত্রায় উন্নীত হয়েছিল, যা গত ৪০ বছরের মধ্যে আর কখনো প্রত্যক্ষ করা যায়নি। বর্তমান বিশ্বে কোনো দেশই বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে কোনো ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব প্রায় প্রতিটি দেশের অর্থনীতির ওপরই পড়ে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ বৃহস্পতিবার সংসদে আগামী অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করবেন। বর্তমান মেয়াদে সরকারের পঞ্চম এবং আগামী নির্বাচনের আগে শেষ বাজেট। অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালেরও পঞ্চম বাজেট। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের তিনটি মেয়াদের ১৫তম বাজেট এটি। এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।’ অর্থ মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এবারের বাজেটের মূল দর্শন হলো ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। গত দেড় দশকে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করে দিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় স্মার্ট বাংলাদেশ ৪টি মূল স্তম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি এবং স্মার্ট ইকোনমি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটটি হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে প্রথম বাজেট। এবারের বাজেটে সঙ্গত কারণেই স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অর্থবছরের পুরো সময় জুড়েই থাকবে সরকারের নানা ধরনের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি এবং বাড়ানো হয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা। জাতীয়/আবির SHARES জাতীয় বিষয়: