টেলিটকের ফাইভজি বাদ, ফোরজির পরিধি বাড়ানোয় জোর প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২২

 

টেলিটকের ফাইভজি প্রকল্প বাতিল করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরিবর্তে ফোরজি সেবার পরিধি বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দেন।

শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

টেলিটকের ফাইভজি প্রকল্প বাতিলের বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মনে করেন টেলিটকের ফাইভজি প্রকল্প এখনই দরকার নেই। বাংলাদেশের সব জায়গায় আগে ফোরজি সেবা নিশ্চিত করা দরকার। শুধু টেলিটককে নয়, সব মোবাইল অপারেটরকে বলেছেন ফোরজির আওতা বাড়াতে।

“যেহেতু সরকার কৃচ্ছতাসাধন করছে এবং টেলিটকের ফাইভজি প্রকল্পের বড় অংশই আমদানি নির্ভর। তাই ডলার ব্যবহারের ওপর চাপ কমাতেই প্রকল্পটি বাদ দেওয়া হয়েছে।”

মন্ত্রী মান্নান আরও বলেন, “আপাতত দেশে ফাইভজি কাভারেজের চেয়ে ফোরজির পরিধি বাড়ানো জরুরি। সেই আঙ্গিকে মোবাইল অপারেটরদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”

গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে টেলিটকের ফাইভজি সেবা চালু করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আনুষ্ঠানিকভাবে এই পরীক্ষামূলক সেবার উদ্বোধন করেন।

প্রাথমিকভাবে হুয়াওয়ে ও নোকিয়ার সহযোগিতায় ছয়টি সাইটে ফাইভজি নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়। টেলিটকের মাধ্যমে ঢাকা শহরের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, ধানমন্ডি ৩২, বাংলাদেশ সচিবালয়, সংসদ ভবন এলাকা এবং ঢাকার বাইরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকা ও টুঙ্গিপাড়ায় ফাইভ-জি কাভারেজের আওতায় আসে। পরে জেলা পর্যায়ে ফাইভজি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করার পরিকল্পনা ছিল।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভায় মোট ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৭ কোটি টাকা। এই টাকার মধ্যে সরকারি অর্থায়নে ১ হাজার ৮৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ৫৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সাহায্য ১২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।

প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ‘কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা উন্নত করতে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদী বরাবর পোল্ডারগুলো পুনর্বাসন; বিনা’র গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ; নির্বাচিত পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশনগুলোর জন্য বেলারুশ থেকে যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম সংগ্রহ; উত্তরা লেক উন্নয়ন; ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটকের নেটওয়ার্কে বাণিজ্যিকভাবে ৫-জি প্রযুক্তি চালুকরণ; ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় সদর দফতর স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসন; ঢাকা কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ।

কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভায় অংশ নেন।

সিলেট/আবির