গানের মঞ্চে নোবেলের মাতলামি, বিব্রত মনির খান যা বললেন

প্রকাশিত: ৩:৫৩ অপরাহ্ণ, মে ৫, ২০২৩

 

‘সারেগামাপা’ খ্যাত মহা বিতর্কিত গায়ক মাইনুল আহসান নোবেলের মাতলামির কারণে সম্প্রতি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। সেখানে রাত সাড়ে ১১টায় গান গাইতে উঠে তিনি মাতলামি শুরু করেন।

ওই ঘটনায় বিরক্ত হয়ে উপস্থিত দর্শক এক পর্যায়ে নোবেলকে লক্ষ্য করে জুতা ও পানির বোতল ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানায়। নোবেলের সেই দিনের অসংলগ্ন আচরণ নিয়ে একটু দেরিতে হলেও মুখ খুললেন একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনির খান। জানালেন, নোবেলের কাণ্ডে তিনি বিব্রত।

সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মনির খান বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্তব্য করতেও আমার লজ্জা লাগছে। কী জবাব দেব, সেটাও আমার কাছে স্পষ্ট নয়। আমি এত লজ্জিত যে, কী বলব। আমার সংগীত জীবনের ত্রিশ বছর। আমি জীবনে একটা সিগারেটে টান দেইনি। আপনাদের কলম ও আমার কণ্ঠ, একসঙ্গেই পথ চলছে। একজন শিল্পীর পড়ন্ত সময়ে এসে ন্যাক্কারজনক ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে হবে—এটা আমার জন্য যে কতটা লজ্জাজনক, তা ভাষায় বলার মতো না।’

এই গায়ক বলেন, ‘সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাজার হাজার দর্শক ছিলেন। বিনোদনমূলক একটি অনুষ্ঠান সবসময় হয় না, বছরে একবার কী দুইবার হয়। করোনা মহামারি কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর আয়োজক কমিটি কলেজের সুবর্ণজয়ন্ত্রী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এসবের মূল্যায়ন একজন শিল্পীকে অবশ্যই করতে হবে। এতগুলো মানুষকে ডেকে এমন হাস্যকর পরিস্থিতি কখনোই আশা করার নয়।’

মনির খান বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের ওস্তাদের কথা বললে হাত-পা মেলে ভালোভাবে চলতে পারি না। সংগীত হচ্ছে গুরুমুখী বিদ্যা। তাদের তো ওই অধ্যাবসায় নেই। বই পড়ে হয়তো অনেক কিছু শিখতে পারব। কিন্তু গুরুর কাছ থেকে যেটা শিখব তা বাস্তবধর্মী শিক্ষা।’

মনির খান আরও বলেন, ‘শিল্পীরা মানুষের স্বপ্নের জায়গায় থাকে, হৃদয়ে থাকে। কোনোভাবেই কোনো আচরণে সেই মানুষের মনে কষ্ট দেয়া ঠিক নয়।’

গত ২৭ এপ্রিল রাতে কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মঞ্চে গান গাওয়ার জন্য উঠেন নোবেল। কিন্তু মঞ্চে উঠে তার মাতলামি ও অসংলগ্ন আচরণের কারণে ক্ষুব্ধ দর্শকরা তাকে বোতল ও জুতা ছুড়ে মারতে থাকেন। একপর্যায়ে আয়োজকরা সরিয়ে নেন নোবেলকে। এতে দর্শকসহ স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন গায়কের প্রতি।

এ ঘটনার পর নোবেল দাবি করেন, ‘সেদিন অনেকটা পথ জার্নি করে গিয়ে ডিহাইড্রেড হয়ে গিয়েছিলাম। এমন না যে সেদিন আমি মাতাল ছিলাম। কোনোভাবে একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। আমি রিকভার করে উঠতে পারিনি। ফলে আমার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বা কথায় সেখানকার শ্রোতারা কষ্ট পেয়েছেন।’

মদ পানের ব্যাপারে নোবলে দাবি করেন, ‘এক বোতল সিগনেচার ধরেন যে ব্যান্ড মেম্বাররা সবাই মিলা খাইলে সেখানে দুই এক প্যাগের বেশি পাওয়া যায় না। আসলে সিচুয়েশনটা অতোটা খারাপ যায়নি, যতটা মানুষ তুলে ধরেছেন।’

এদিকে, নোবেল মাদক খাওয়া ছাড়তে না পারায় তার স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ তাকে তালাক দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এ কথা জানান সালসাবিল।

তিনি বলেন, ‘তালাকের নোটিশ আগেই দিয়েছিলাম। কিন্তু হোল্ড করে রেখেছিলাম। নোবেলকে ভালো হয়ে ফিরে আসার সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু সে সাফ জানিয়ে দিয়েছে নেশা ছাড়তে পারবে না। তাই আমারও তার সঙ্গে সংসার করার কোনো ই্চ্ছা নেই।’

বিনোদন/আবির