করোনার ৩০ লাখ টিকা দিচ্ছে ফাইজার: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, মে ২৯, ২০২৩

 

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ফাইজার করোনার ৩০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেবে। ফাইজারের এসব টিকা বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে।

সোমবার (২৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দেশব্যাপী ভ্যাক্সিন কার্যক্রম উদ্বোধন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফাইজার থেকে বিনামূল্যে ৩০ লাখ টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ। এসব টিকা তৃতীয়, চতুর্থ ডোজ হিসেবে অথবা বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া হবে। ষাটোর্ধ মানুষকে চতুর্থ এবং আঠারোর্ধ মানুষকে তৃতীয় ডোজ হিসেবে দেওয়ার কথা জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর রোগীর সংখ্যা পাঁচ গুণ। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭০৪ জন ডেঙ্গুরোগী পেয়েছি। ঢাকার উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় যেখানে ঘনবসতি বেশি সেখানে মশার উপদ্রব বেশি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এবং পার্শ্ববর্তী দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জানুয়ারি থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ১ হাজার ৭০৪ জন ডেঙ্গুরোগী পেয়েছি। এ সময়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের হাসপাতালের পরিচালকদের সঙ্গে ডিজির (স্বাস্থ্য অধিদপ্তর) বৈঠক করেছি। হাসপাতাল প্রস্তুত রাখতে বলেছি। ইতিমধ্যে ডাক্তার-নার্সদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে প্রচার-প্রচারণার জন্য পোস্টার, ব্যানার এবং টিভিতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আপনাদের মাধ্যমে আমরা জনগণকে অবহিত করতে চাই যে, আপনারা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা নিন। মানে বাসার আশেপাশের আঙিনা পরিষ্কার রাখুন, নিজের ঘর স্প্রে করুন, আশেপাশের যদি জঙ্গল থাকে, সেটা স্প্রে করুন এবং পানি বা যদি অন্য কিছু জমে থাকে সেগুলো সরিয়ে ফেলুন। এ কাজগুলো আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে এসে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নেবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডেঙ্গুরোগীদের জন্য হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড এবং আলাদা কর্নার তৈরি করা হয়েছে। আমরা ২৫০০ ডাক্তার এবং নার্সকে ট্রেনিং দিয়েছি। জনগণকে সচেতন করার জন্য আমরা বিভিন্ন মহলকে যুক্ত করেছি। সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও যুক্ত করা হয়েছে, যারা জনগণকে সতর্ক করতে পারবে সবাইকে যুক্ত করা হয়েছে।

ভিসিভি ভ্যাকসিনের ৩য় ও ৪র্থ ডোজ দেওয়া শুরু এ সপ্তাহেই

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির মাধ্যমে ৩০ লাখ ডোজ ভিসিভি (ভ্যারিয়েন্ট কন্টেয়নিং ভ্যাকসিন) হাতে পাওয়া গেছে। এই ভ্যাকসিন ৩য় ও ৪র্থ ডোজ হিসেবে উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য এ সপ্তাহ থেকেই দেশের সিটি কর্পোরেশন, জেলা/উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে স্থায়ী কোভিড-১৯ টিকাদান কেন্দ্র থেকে দেয়া শুরু হবে।

তিনি জানান, চলমান কোভিড মোকাবিলায় বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও সফলভাবে ভ্যাকসিন প্রদান করেছে। গোটা বিশ্বে যত ভ্যাকসিন পেয়েছে তার ১১ ভাগ বাংলাদেশ পেয়েছে। সেই ভ্যাকসিন থেকে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৮৮.৫১ ভাগ মানুষকে ১ম ডোজ, ৮২.১৮ ভাগ মানুষকে ২য় ডোজ, ৩৯.৬২ ভাগ মানুষকে ৩য় ডোজ এবং ১.৮৫ ভাগ মানুষকে ৪র্থ ডোজ টিকা ইতোমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।

‘এই ভিসিভি ভ্যাকসিন ব্যবহারে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এটির ব্যবহারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থার ইতিবাচক মতামত রয়েছে। ৩য় ডোজ পাবে ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তি, ৪র্থ ডোজ ৬০ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী বা দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা এবং সম্মুখসারির যোদ্ধাগণ। ৩য় ডোজ দেওয়া হবে ২য় ডোজ টিকা প্রাপ্তির ৪ মাস পর, ৪র্থ ডোজ পাবেন ৩য় ডোজ প্রাপ্তির ৪ মাস পর।

এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) নাজমুল হক খানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

স্বাস্থ্য/আবির