আ.লীগ গায়ের জোরে কখনও রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরার অপচেষ্টা করেনি: ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত: ৪:০৭ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০২৩

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটিয়ে গায়ের জোর দেখিয়ে কখনও রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরার অপচেষ্টা করেনি। বরং বিএনপিই বার বার গায়ের জোর দেখিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা করেছে।’

মঙ্গলবার (৯ মে) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘আপত্তিকর বক্তব্য ও নির্লজ্জ মিথ্যাচারের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন— গায়ের জোরে নির্বাচন করা যাবে না। আওয়ামী লীগ সর্বদা জনগণের রায়ের উপর আস্থাশীল এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটিয়ে গায়ের জোর দেখিয়ে কখনও রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরার অপচেষ্টা করেনি। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে সাংবিধানিক চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। সেনাতান্ত্রিক শাসনের মতবাদ নিয়ে সামরিক ছাউনিতে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপি। সুতরাং বিএনপি বার বার গায়ের জোর দেখিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা করেছে। এই দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচন করেছিল বিএনপি। আবার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অপ-তৎপরতায় লিপ্ত হয়ে ২০০৭ সালে গায়ের জোরে নির্বাচন করতে গিয়ে গণআন্দোলনের মুখে নিজেদের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন তা বাতিল করতে বাধ্য হয়। এভাবে গায়ের জোর দেখিয়ে যথেচ্ছাভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বার বার ক্ষমতা দখলে বিএনপির ব্যর্থ অপকৌশল এদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। কারও বাকস্বাধীনতা খর্ব করার লক্ষ্যে নয়। বরং বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে গণমাধ্যম শিল্পের সম্ভাবনার এক স্বর্ণদুয়ার উন্মোচিত করেছেন। সাংবাদিকসহ সকলের বাকস্বাধীনতার অবারিত সুযোগ করে দিয়েছেন। সেই সুযোগে একটি গোষ্ঠী সকল ধরনের জবাবদিহি ও দায়িত্বশীলতা এড়িয়ে স্বাধীনতার নামে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেশবিরোধী অপপ্রচারের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ ডিজিটাল মাধ্যমে সংঘটিত সকল অপরাধ দমনের লক্ষ্যে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছে। পৃথিবীর দেশে দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অনুরূপ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে কথা বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের তথ্যসন্ত্রাসী ও অপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, মিথ্যা মামলা দেওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলামের অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত। কোথাও কোনও অপরাধ সংঘটিত হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সে বিষয়ে তদন্ত করে। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রুটিন কাজের অংশ। আর এই তদন্তের উপর ভিত্তি করে আদালত বিচারিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করে। বিএনপি তাদের সন্ত্রাসী নেতাকর্মীদের রক্ষা করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলে থাকে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। জাতির পিতা স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের মাধ্যমে এদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে চেয়েছিলেন। জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাঁর সুযোগ্য শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন। সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। করোনা অতিমারি ও বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারার কারণে বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করছে। বিশ্বসভায় আজ শেখ হাসিনার নাম বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব পেয়ে বাঙালি জাতি গর্বিত। আমরা বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী দিনে উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ।’

রাজনীতি/আবির