আওয়ামী লীগের আয় কমেছে, বেড়েছে ব্যয়

প্রকাশিত: ৬:৪১ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২৩

 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আয় কমেছে, বেড়েছে ব্যয়। দলটির ২০২২ সালে আয় হয়েছে ১১ কোটি টাকা। এ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তহবিল বেড়ে দাঁড়াল ৭৩ কোটি টাকায়। তবে এর আগে বছরের তুলনায় দলটির আয় কমেছে।

সোমবার (৩১ জুলাই) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দলটির দেওয়া হিসাব থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এম আশিকুর রহমান এই রিপোর্ট ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলমের কাছে জমা দেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের রিপোর্টটি পড়ে শোনান।

এ সময় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবাহান গোলাপ ও দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের ২০২২ পঞ্জিকা বছরের আয় ১০ কোটি ৭১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৮ টাকা। ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৯ টাকা। উদ্বৃত্ত আছে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৫১ হাজার ১৮৯ টাকা। আর মোট ব্যাংকে স্থিতির পরিমাণ ৭৩ কোটি ২৮ লাখ ২১ হাজার ৩৫৫ টাকা।

দলটি মনোনয়ন ফরম বিক্রি, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ফরম বিক্রি ও সম্পত্তি থেকে আয় দেখানো হয়েছে। আর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, সংগঠন পরিচালন ব্যয়, অফিস ও প্রকাশনা বাবদ ব্যয় দেখিয়েছে।

২০২১ পঞ্জিকা বছরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মোট আয় ছিল ২১ কোটি ২৩ লাখ ৪৬ হাজার ১০৬ টাকা। আর ব্যয় ছিল ৬ কোটি ৩০ লাখ ১৯ হাজার ৮৫২ টাকা। এ হিসেবে এবার দলটির আয় কমলেও ব্যয় বেড়েছে। তবে তহবিল বেড়েছে। গত বছর আয়-ব্যয়ের পর দলটির তহবিল ছিল ৭০ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার ১৬৬ টাকা।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে আবারও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন কানাডার আদালত। এ নিয়ে দেশটির আদালতে পঞ্চমবারের মতো বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করা হলো।

মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক নামে এক বিএনপি-কর্মী দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করলে তা নাকচ করে দেন দেশটির ফেডারেল কোর্ট।

রায়ে উল্লেখ করা হয়, ওই ব্যক্তি এমন দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যেই সংগঠন বল প্রয়োগ এবং সন্ত্রাসের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের চেষ্টা করছে।

সবশেষ ১৫ জুন একটি জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন নিষ্পত্তিকালে আদালতের বিচারক বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেন। বিএনপির ওই কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ করে দেওয়ার বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল রিভিউটি দায়ের করা হয়।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার উল্লেখ করে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন মোহাম্মদ জিপসেদ ইবনে হক। সেই রায় রিভিউতে দেশটির ফেডারেল কোর্টের রায়ে উল্লেখ আছে, আবেদনকারী ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবী দলের সদস্য ছিলেন। কানাডার অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বিএনপিকে এমন একটি সংগঠন বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পেয়েছে যারা, বল প্রয়োগ এবং নাশকতায় জড়িত থেকে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করেছে।

রায়ে বলা হয়, ‘কানাডার অভিবাসন এবং উদ্বাস্তু সুরক্ষা আইন ৩৪ ধারায় আবেদনকারীকে কানাডায় বসবাসের অযোগ্য হিসেবে রায় দেওয়া হয়। এই ধারার অধীনে দেখা যায়, সেসব ব্যক্তি কানাডায় আশ্রয়ের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে, যারা যেকোনো সরকারের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগের সঙ্গে সরাসরি কিংবা প্ররোচনায় জড়িত বা একটি গণতান্ত্রিক সরকার, প্রতিষ্ঠান বা প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কাজে জড়িত বা সরাসরি সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ছিল।’

ফেডারেল কোর্টের এই রিভিউয়ের মানদণ্ড হিসেবে তুলে ধরা হয়, ২০১৮ সালে মাসুদ রানা ও ২০২২ সালে সেলিম নামে বিএনপির অপর দুই কর্মীর রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রার্থনা নাকচ করে দেয়ার বিষয়টি। সেসময়েও বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে এই দুই বাংলাদেশির রাজনৈতিক আশ্রয়ের প্রার্থনা বাতিল করা হয়।

এর আগে ২০১৭ সালে মোহাম্মাদ জুয়েল হোসেন গাজী নামে ঢাকার মিরপুরের স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন কর্মীর কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পর ফেডারেল কোর্টে এই রিভিউর আবেদনে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন অভিধা দেয়া হয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বিএনপির কর্মী হিসেবে মো. মোস্তফা কামাল নামে এক ব্যক্তি আশ্রয় চাইলে দ্বিতীয় দফায় বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সেবছর অক্টোবরে মাসুদ রানা এরপর ২০২২ সালে ছাত্রদল কর্মী সেলিম বাদশার অভিবাসন নাকচ করার সময়ও বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে কানাডার আদালত।

রাজনীতি/আবির