অর্থ পাচার মামলা এনু-রুপনসহ ১১ জনের সাত বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ৩:১৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২২

 

রাজধানীর ওয়ারী থানার অর্থ পাচার আইনের মামলায় ক্যাসিনো কান্ডে আলোচিত পুরান ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও রুপন ভূঁইয়াসহ ১১ আসামিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে চার কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেন এ রায় দেন।

দণ্ড পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- জয় গোপাল সরকার, মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম আজাদ, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম।

আসামিদের মধ্যে শিপলু, রশিদুল, সহিদুল ও পাভেল মামলার শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। তুহিন আছেন জামিনে। আর অন্য ছয় আসামি কারাগারে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, অর্থপাচার নিঃসন্দেহে আইনের শাসন এবং দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য মারাত্মক হুমকি। মানি লন্ডারিং এখন একটি গুরুতর অপরাধ। ক্যাসিনো জুয়া এবং ব্যবসা মূলত সংগঠিত অপরাধের জন্য নোংরা আর্থিক ব্যবস্থায় অর্থ পাচারের জন্য একটি পিছনের দরজা হয়ে উঠেছে। অবৈধ জুয়ার কার্যক্রম বিশেষভাবে গুরুতর। কারণ অবৈধ জুয়া থেকে অর্জিত অর্থ পাচার, চাঁদাবাজি এবং জালিয়াতি সহ অন্যান্য কার্যকলাপে অর্থায়নের জন্য ব্যবহৃত হয়। যদি মানি লন্ডারিং অপরাধগুলো নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তাহলে মানি লন্ডারিং আর্থিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং উদীয়মান বাজারে উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই উপযুক্ত শাস্তি অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অর্থ পাচারের অপরাধ থেকে বিরত রাখতে পারে।

এর আগে রায় ঘোষণার জন্য গত ৬ এপ্রিল দিন ধার্য ছিল। তবে বিচারক ইকবাল হোসেন ছুটিতে থাকায় সেদিন রায় হয়নি। পরে আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মনির কামাল রায় ঘোষণার জন্য ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের এনুর কর্মচারী আবুল কালাম আজাদের ওয়ারীর লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাড়ি ঘেরাও করে র‌্যাব।

এরপর কালামের স্ত্রী ও মেয়ের তথ্যে ওই বাড়ির দোতলা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় র‌্যাব-৩-এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) জিয়াউল হাসান ২৫ নভেম্বর ওয়ারী থানায় মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ বলা হয়, এনু ও রুপন দীর্ঘদিন ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছেন। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় তারা নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ কালামের বাসায় রেখেছিলেন। কালাম সেগুলো নিজের কাছে রাখেন, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।

মামলার তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২১ জুলাই ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন সিআইডির পরিদর্শক মোহাম্মদ ছাদেক আলী।

এরপর গত বছরের (২০২১ সাল) ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। বিচার চলাকালে আদালত ২০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য নেন।

সিলেট/আবির